জ্ঞানটা আসলে কি?
- AbuSayed Mahfuz
- Aug 16
- 6 min read
জ্ঞানটা আসলে কি? জ্ঞান, শিক্ষা, মেধা, বুদ্ধি এ সবগুলোর একটির সাথে অন্যটির সম্পর্কই বা কি? সম্ভবতঃ রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন “লোকটা বি.এ. পাশ করিল কিন্তু শিক্ষিত হইলো না“।
পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে একটা দৃষ্টিভঙ্গি দেয়া হয়েছে এভাবে যে, ”তাদের প্রাণ (ক্কলব) আছে তথাপী তারা তা দিয়ে বুঝে না, চোখ আছে তবু তারা দেখেনা, কান আছে তবু তারা শোনে না। এরা চতুষ্পদ পশুর মত, এমনকি পশুর চে’ বেশী পথভষ্ট।”
জ্ঞানের সংজ্ঞা এবং পরিধি নিয়ে বিজ্ঞানী, মনস্তত্ববিদদের মধ্যে অনেক মত রয়েছে। তবে মোটামুটিভাবে পাশ্চাত্যের বিজ্ঞানী দার্শনিকদের অনেকে জ্ঞানকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন।
(১) তথ্যগত জ্ঞান (ওহভড়ৎসধঃরাব কহড়ষিবফমব) (২) বিশে�ষনধর্মী জ্ঞান বা প্রজ্ঞা (অহধষুঃরপধষ কহড়ষিবফমব) এবং (৩) ঐশ্বরিক জ্ঞান (উরারহব কহড়ষিবফমব)
পবিত্র কোরআনের দৃষ্টিতেও যে দিকগুলোর সমর্থন পাওয়া যায়। তথ্যগত যে জ্ঞান তাকে কোরআনের ভাষায় বলা হয়েছে আল ইলম ইয়াক্কিন। বিশে�ষনধর্মী যে জ্ঞান তাকে বলা হয়েছে তাকে কোরআনের দৃষ্টিতে বলা হয়েছে আল আইনাল ইয়াক্কিন বা কোন কোন ক্ষেত্রে হিকমা। আর ঐশ্বরিক যে জ্ঞান তাকে কোরআনের ভাষায় বলা হয়েছে আল হাক্বাল ইয়াক্কিন। কোরআনের সংজ্ঞাকে স্পষ্ট করে বলা যেতে পারে ইলম, হিকমাহ এবং হক্ক।
(১)তথ্যগত জ্ঞানঃ প্রথমত আসা যাক এই তথাগত জ্ঞান বা ইনফরমেটিভ নলেজ বলতে কি বুঝানো হয়। এটা মূলতঃ আমরা যা কিছুই শিখি প্রায় সবগুলিই ইনফরমেটিভ নলেজ। অর্থাৎ যে সমস্ত তথ্য আমরা আমাদের মগজে স্টোর করি। আমরা যতগুলি ডিগ্রীই অর্জন করি তার সবগুলিই কিন্তু এই ইনফরমেটিভ জ্ঞানের আওতায় পড়ে। তথ্যগত জ্ঞানকে অন্য অর্থে মুখস্থ বিদ্যা বলা যেতে পারে।
একজন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী, পি,এইচ,ডিধারী সহ যে কোন ধরনের অর্জিত জ্ঞানই এই প্রথমত ইনফরমেটিভ নলেজ এর আওতাভুক্ত। আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে বলা যায় ধরা যাক, একজন ডাক্তার কি শেখেন? তিনি মানুষ শরীর সর্ম্পকে তথ্য তাঁর মগজে স্টোর করেন। এক কথায় মানব শরীর বিদ্যা। কোন রগ এবং রোগের নাম কি। কোন রগ কিভাবে ফাংশান বা কাজ করে। কোন রক্তপ্রণালীতে কোন রোগ হলে কিভাবে সারতে হবে ইত্যাদি। এছাড়াও একজন ডাক্তারকে ঔষধের নাম মুখস্থ করতে হয়।
তেমনিভাবে ধরা যাক একজন মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার তিনি কলকব্জার নাম মুখস্থ করেন। কলকব্জার প্রকুতি কি, কোন কলকব্জা কিভাবে লাগাতে হয় তা শিখেন বা মুখস্থ করেন।
একজন কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ার মুখস্থ করেন বিভিন্ন ধরনের কেমিকেলের নাম প্রকৃতি। কোন কেমিকেল দাহ্য আর কোনটা দাহ্য নয়। কোন কেমিকেলের কাছে কোন কেমিকেল গেলে বিষ্ফোরন ঘটতে পারে তা একজন কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ার শেখেন। আবার একজন ভালছাত্র বইয়ের সবগুলো তথ্য হুবহু মুখস্থ করে সকল ছাত্র ছাত্রীর উপর সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করতে পারে। একজন অর্থনীতি অধ্যাপক অর্থনীতির সকল বা বেশীরভাগ তথ্য মুখস্থ করে তাঁর সেই বিদ্যাকে ছাত্রদের সামনে প্রকাশ করেন।
তেমনিভাবে একজন সমাজবিজ্ঞানী সমাজে কি ঘটছে, অতীতে কি ঘটেছে সে সমস্ত তথ্য মগজে সংগ্রহ করেন। কোন ধরনের মানুষ কোন প্রকৃতিতে, কোন আবহাওয়ায় বা কো খাদ্য প্রক্রিয়ায় কোন ধরনের আচরণ করেন। অর্থাৎ সমাজে সংঘটিত ঘটনাবলীকে মগজে সংরক্ষণ করেন।
এখানে একটি বিষয় আগেই বলে রাখা দরকার যে, যেহেতু এই মূহুর্তে আমরা তথ্য জ্ঞানের দিক আলোচনা করছি সেহেতু মনে হতে পারে সবগুলো জ্ঞানই মুখস্থ বিদ্যা, বাস্তবতা কিন্তু তা নয়। তথ্যগত বিদ্যা কিভাবে বিশে�ষনধর্মী জ্ঞানের সাথে মিলে একত্রে শক্তিশালি হতে পারে পরবর্তি আলোচনায় তা দেখানো হবে।
(২) বিশে�ষনধর্মী জ্ঞান বা প্রজ্ঞা (অহধষুঃরপধষ কহড়ষিবফমব) ঃ
বিশে�ষনধর্মী জ্ঞানকে অনেকগুলো নামে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। প্রজ্ঞা, বুদ্ধিমত্তা, চাতুর্য্য, মেধা, প্রতিভা ইত্যাদি। বাংলাদেশের কোন কোন অঞ্চলে একটা প্রবাদের প্রচলন আছে যে, “এলেমের চে‘ হেলেমের জোর বেশী“। সহজ অর্থে সম্ভবতঃ এই হেলেমের জোরটাই এই প্রকারের জ্ঞান। আমরা অনেক সময় অনেক বড় বড় ব্যাক্তিতের নাম শুনি যাঁরা একাডেমিক লেখাপড়া বেশী করেন নি, কেউ কেউ আছেন নামটাও দস্তখত করতে জানেন না অথচ দুনিয়াটা চষিয়ে খান। বাংলাদেশের বিশিষ্ট কোটিপতি আকিজ মিয়ার অবস্থা অনেকটা তাই।
দ্বিতীয় প্রকারের এই জ্ঞানকে কোরআনে হিকমত হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে আরো বলা হয়েছে, “তোমাদের মধ্যে যাদেরকে হিকমত দেয়া হয়েছে তাদের অনেক কল্যাণ দেয়া হয়েছে।” অবশ্য হাদীসে ভাষায় এধরনের জ্ঞান ফিকহ হিসেবেও সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। যদিও আমরা অনেকেই ফিক‘হ কে শুধু মাসলা মাসায়েলের জ্ঞান মনে করে থাকি। ফিকহ শব্দের বাংলা অর্থ করা যেতে পারে বোধশক্তি। রাসুলুল�াহ সাল�াল�াহু আলাইহি ওয়াসাল�াম হযরত আবদুল�াহ ইবনে মাসউদের জন্য দোয়া করেছিলেন ”আল�াহুম্মা ফাক্কিহ হু ফিদ্দিন” অর্থাৎ আল�াহ তাঁকে দ্বীনের উপর গভীর বোধশক্তি দান করুন।
আগেই যেমন বলা হয়েছে এই প্রকৃতির জ্ঞানকে অনেক নাম দেয়া যেতে পারে বাংলায় যেমন প্রজ্ঞা, বুদ্ধিমত্তা, চাতুর্য্য, মেধা, প্রতিভা ইত্যাদি। ইংরেজীতে সাধারণত ডরংফড়স, ওহঃবষবষপঃ, শব্দগুলো ব্যাবহৃত হয়ে থাকে। গবেষনা কর্মও কিন্তু বিশে�ষনধর্মী জ্ঞানের পর্যায়ের জ্ঞান।
এই প্রকারের জ্ঞানের উদাহরণ আমরা দৈনন্দিন জীবনে পেয়ে থাকি। একজন বুদ্ধিমান বা প্রজ্ঞাসম্পন্ন ব্যাক্তি সমস্যার সমাধান খুব তাড়াতাড়ি করতে পারেন। এজন্যই একই মেডিকেল স্কুলে ডাক্তারী পড়ে কেউ নামকরা হন আর কেউ খুব সাদামাটা রোগ বালাইর দাওয়াই দিয়েই দিন কাটান। এই প্রজ্ঞা মেধাকে কোন কোন ক্ষেত্রে চালাক চতুর ও বলা হয়ে থাকে।
এখানে আরেকটি বিষয় লক্ষ্যনীয় যে, দ্বিতীয় প্রকারের এই জ্ঞান কোন কোন ক্ষেত্রে প্রথম প্রকারের জ্ঞান বা তথ্যগত জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে পারে। অর্থাৎ তথ্যগত জ্ঞান বা পড়াশোনা বা অধ্যয়ন মানুষকে মেধাবী করে তোলে। ২+২=৪, এটা জানলেই হয়তোবা বুদ্ধি খাটাবে যে, ৩+১=৪ হতে পারে। একজন লোক যদি ২ বা + চিহ্নটাই না চেনে তাহলো বা ২ যে একটা অংক এটা না জানে তাহলে এসংক্রান্ত বিষয় মেধা খাটানো প্রশ্নই আসে না। কম্পিউটারে একটা প্রোগ্রামিং কিভাবে তৈরি হচ্ছে এটা জানলে তখন আরেকটি প্রোগ্রাম তৈরির বুদ্ধি মাথায় খেলতে পারে। ব্যাবসায়িক আকিজ মিয়ার উদাহরনই দেয়া যাক, তিনি হয়ত পুস্তক মুখস্তকরন বিদ্যায় অশিক্ষিত হতে পারেন কোন তথ্য তাঁর কাছে না থাকতে পারে কিন্তু ব্যাবসা কিভাবে পরিচালনা করতে হয় সে তথ্য তাঁর কাছে ছিল বলেই তিনি ব্যাবসায়ের নতুন নতুন ফন্দি আবিষ্কার করতে পেরেছেন।
(৩)ঐশ্বরিক জ্ঞান (উরারহব কহড়ষিবফমব)
তৃতীয় যে প্রকারের জ্ঞান আমরা দেখতে পাচ্ছি তা হচ্ছে ঐশ্বরিক জ্ঞান। ঐশ্বরিক জ্ঞানের পরিধি সর্ম্পকে বিভিন্ন বিশেষত ইসলামি চিন্তাবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। কারো কারো মতে এই জ্ঞানটা শুধুমাত্র নবুওয়তের সাথে সীমাবদ্ধ। একমাত্র আল�াহ তায়ালাই অহীর মাধ্যমে এই জ্ঞান দিতে পারেন। কারো কারো মতে এর পরিধিটা আরো একটু বিস্তৃত। তাঁরা অহীর বাইরে এই জ্ঞানটাকে ইলহামের পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে থাকেন। অর্থাৎ অলী আল�াহ বা আল�াহর বিশেষ বান্দাহরা আল�াহ পাকের পক্ষ থেকে বিশেষ মুহুর্তে যে ইশারা পান সেটাও ঐশ্বরিক জ্ঞানের আওতায় পড়ে।
তবে অধিকাংশ পশ্চিমা সমাজবিজ্ঞানী এবং ইসলামী গবেষকদের মতে এটা মূলত ঈশ্বর, খোদা বা আল�াহ সম্পর্কীয় জ্ঞান। বা ধর্মীয় জ্ঞান, ধর্ম বিশ্বাস।
পাশ্চাত্যের কোন একজন পন্ডিত বলেছেন, "ওভ ুড়ঁ ঃবধপয ুড়ঁৎ পযরষফৎবহ ৩ 'জ'ং, (জবধফরহম, ডৎরঃরহম ধহফ অৎরঃযসবঃরপ) নঁঃ ফড় হড়ঃ ঃবধপয ধ ভড়ঁৎঃয 'জ" (জবষরমরড়হ) ঃযবহ ুড়ঁ রিষষ মবঃ ধ ভরভঃয "জ" (জধংপধষ)”
অর্থ হলো আপনি যদি আপনার সন্তানকে তিনটি ’আর’ অর্থাৎ রিডিং, রাইটিং এবং এরিথমেটিক (পড়া, লেখা এবং অংক) শিক্ষা দেন। কিন্তু যদি চতুর্থ ’আর’ রিলিজিয়ন বা ধর্ম শিক্ষা না দেন তাহলে আপনি পাবেন একটি পঞ্চম ’আর’ অর্থাৎ রাসকাল বা বদমাশ।
কোরআনের সেই আয়াতের দিকে লক্ষ্য করি যেখানে বলা হয়েছে,
”তাদের প্রাণ (ক্কলব) আছে তথাপী তারা তা দিয়ে বুঝে না, চোখ আছে তবু তারা দেখেনা, কান আছে তবু তারা শোনে না। এরা চতুষ্পদ পশুর মত, এমনকি পশুর চে’ বেশী পথভষ্ট।”
আদম (আঃ) কে সৃষ্টির পর আল�াহ সুবহানাহু ওয়া তা’লা তাঁকে এই জ্ঞান দিয়ে সৃষ্টি করেছিলেন। পবিত্র কোরআনের ভাষায় আদম (আঃ) কে আল�াহ পাক সকল প্রকার তথ্য প্রদান করেছিলেন। পবিত্র কোরআনের সুরা বাক্কারা ৩১ নং আয়াতে আল�াহ পাক ঘোষনা দেন যে, ”আল�াহ পাক আদমকে সকল কিছুর নাম শিক্ষা দিয়েছিলেন।” উক্ত আয়াতে যে শব্দটা খুব উলে�খযোগ্য তা হলো ‘ক্লু�াহা‘ সকল কিছুর জ্ঞান। প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ আল আজহার এবং মক্কাস্থ উম্মুল ক্কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ডঃ তাহা জাবির আল আলওয়ানী এ সম্পর্কে ”ওয়া আল�ামা আদামাল আসমা’ কুল�াহা” শিরোনামে একটা পুরো বই লিখেছেন। যেখানে তিনি আদম আঃ কে আল�াহ তায়ালা প্রদত্ত জ্ঞানের সীমা পরিসীমা বর্ণনা করেছেন।
বিখ্যাত মুফাসসির আল�ামা মুফতি মোহাম্মদ শফির বিখ্যাত তাফসির মা’আরিফুল কোরআনে আদম আঃ কে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম গাড়ির আবিষ্কারক বলা হয়েছে কারণ আদম আঃ কে যখন পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল তখন জমীনে চাষাবাদের জন্য তিনি কাঠের চাকা বা চাকতি বানিয়েছিলেন।
সে যাই হোক সুতরাং আমরা জ্ঞানের আলোচনার এই প্রেক্ষিতে পবিত্র কোরআন থেকে জানতে পারি যে, আল�াহ পাক আদম আঃ কে জ্ঞান প্রদান করেছিলেন। এবং আদম আলাইহিস সালামের সে জ্ঞান মূলত তথ্যগত, বিশে�ষণধর্মী এবং একজন নবী হিসেবে ঐশ্বরিক সবই ছিল। অন্য অর্থে আদম আঃ এর জ্ঞান ছিল পরিপূর্ণ।
এখন একটু আলোচনা করা যাক কিভাবে এই তিন প্রকারের জ্ঞানের সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা এবং তা কিভাবে হয় সে বিষয়ে আলোকপাত করা যাক।
হ্যাঁ, একজন ব্যাক্তি যদি শুধুমাত্র তথ্যগত বিদ্যা অর্জন করেন, অর্থাৎ শুধু বই মুখস্থ করেন কিন্তু বুদ্ধিমত্তার সাথে কাজ না করেন।
এই আলোকে একজন পি,এইচ,ডি ধারী প্রফেসর, চিকিৎসাবিদ্যায় ডিগ্রীধারী ডাক্তার, প্রযুক্তিবিদ্যায় পারদর্শি ইঞ্জিনিয়ারও অজ্ঞ বা গন্ডমূর্খ থেকে যেতে পারেন যদি তাঁর মধ্যে প্রজ্ঞা, বুদ্ধিমত্তা, ব হিকমত না থাকে। তাঁর কথা বার্তায় বা আচরণে মানুষ তাকে অপদার্থ ইডিয়ট ভাবতে পারেন।
যদি এই প্রফেসর হয়তোবা প্রফেসর হবার জন্য তাঁর নিদ্দিষ্ট বিষয়ের বইই শুধু গলধঃকরন করেছেন। একজন ডাক্তার হয়তোবা ডাক্তার হয়ে অধিক অর্থ কামাইয়ের জন্য শুধু মানব শরীরের রক্ত, মাংস, হাড় গোড় সংক্রান্ত বইই ঘাটাঘাটি করেন। একজন রিসার্চার সারা জীবন তাঁর ল্যাবেই জীবন কাটান। তখন এই সমস্ত মুখস্ত বিদ্যাধারীরা জীবনের কোননা কোন ক্ষেত্রে অজ্ঞ থেকে যেতে পারেন।
প্রসংগক্রমে উলে�খ করা যেতে পারে যে, পশ্চিমা জগতে এজন্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে কোন টেকনোলজিক্যাল বিদ্যার পাশাপাশি লিবরাল আর্টস কোর্স নেয়া বাধ্যতামূলক। লিবরাল আর্টসে মূলত ইতিহাস, সমাজ, ভাষা, ধর্ম এ বিষয়গুলোরই কোর্স।
তেমনিভাবে একজন ব্যাক্তি যদি তথ্যগত বিদ্যায় এবং বিশে�ষনধর্মী জ্ঞানে পারদর্শি হন কিন্তু তাঁর মধ্যে ধর্ম ঐশ্বরিক জ্ঞান, ধর্ম, নীতি, মানবতাবোধ না থাকে বরং থাকে স্বার্থপরতা, লোভ, শুধু অর্থাকাংখা তাহলে কোরআনের ভাষায় তারা পশুর মতই বা পশুর চে’ও বেশী পথভ্রষ্ট। বা পশ্চিমা সে সমাজবিজ্ঞানীর দৃষ্টিতে তারা রাসকাল বা বদমাশ।
এধরনের শিক্ষিতরা একদিকে তাদের তথ্য ভান্ডার থাকে পরিপূর্ণ, সংশি�ষ্ট বিষয়ে তারা জ্ঞানী, অপরদিকে তাঁরা বুদ্ধিমান, তাঁরা জানেন কোথায় কিভাবে কথা বলতে হবে, কার সাথে কিভাবে আচরণ করতে হবে। কোন সমস্যার সমাধান কিভাবে করতে হবে। কিন্তু তাদের মধ্যে ধর্মবোধ, নীতিবোধ, ভালবাসা, হৃদয়, শ্রদ্ধা না থাকলে তারা জ্ঞানী, বুদ্ধিমান হয়েও স্বার্থের প্রয়োজনে অমানুষ হয়ে যেতে পারে।




Comments