top of page
Search

আব্বাকে কেমন দেখেছি


২২শে ফেব“য়ারী ২০০৭, বহষ্পতিবার। বেলা একটা দশ। আমি ¯ুল থেকে লাঞ্চ বেকে বেরিয়ে গিয়ে লাঞ্চ করবো ভাবছিলাম। গাড়ি ডাইভ করা অব¯ায়ই হঠাৎ একটা মিস কল পেলাম বাংলাদেশ থেকে। আমার

 

মধ্যে কোন প্রকার চিšা—

 

ভাবনা কিছইু

 

নেই। এটাও মাথায় আসেনি যে বাংলাদেশে তো এখন রাত বারটার

 

বেশী, বাংলাদেশ থেকে এখন কেন ফোন করবে।

হঠাৎ আরেকবার ফোন বেজে উঠলো। বাম হাতে গাড়ির স্টিয়ারিং ধরে রেখে ডান হাতে ফোন ধরলাম।

ফোনের অপর পাশে আমার শদ্ধেয় বড় ভাই হাফেজ মাওলানা খালেদ সাইফুল-াহ। সেকেন্ডের মধ্যে তাঁর সরাসরি উচ্চারন, ”আবসাইদ (আমার পারিবারিক নাম) আব্বা ইšেকাল করেছেন। তোর ভাবী, মাসদু (আমার সেজো ভাই) সহ আমরা সবাই বাড়ী যাচ্ছি।”

এই বলেই আর কিছু তিনি বলেছেন কিনা মনে নেই, তবে ফোন রেখে দিয়েছেন। আমি ডাইভ করতে

 

থাকলাম। বঝে উঠতে পারলাম না, কি শুনলাম। চিšা— মুহুর্তে।

 

করতে পারলাম না, কি করা উচিত আমার সে

 

মত্যরু

 

সময় আমার আব্বার বয়স ছিল ৮৮। তবওু

 

তাঁর মত্যটা ছিল একেবারে আকস্মিক। আব্বা এমন

 

কোন অস¯ু

 

তায় ভগছিলেন না যে আমাদের সামান্যতম ভাবনা থাকতে পারে যে, তিনি হঠাৎ করে এভাবে

 

চলে যাবেন। যদিও তিনি গত ৪-৫ বছর থেকে আমাদেরকে বার বার ডেকে বলছিলেন যে, ”বাবারা, আমার যাওয়ার সময় হয়ে গেছে, যে কোন সময় ডাক পড়তে পারে।”

আমার আম্মার বয়স ছিল ৬৭। আম্মা বললেন, তোর আব্বা ৮৮ বছর বয়স হলেও ভাবিনি এত সকাল চলে

 

যাবেন। মত্যরু

 

ঠিক ৩০ মিনিট আগেও আব্বা হাঁটাহাঁটি করেছেন। এশার নামাজ পড়েছেন, কমলা খেয়েছেন

 

তারপর হঠাৎ বললেন তাঁর ভাল লাগছেন বলে শুয়ে পড়লেন। এবং সেই শোয়াই তাঁর শেষ শোয়া ছিল।

 

আব্বাকে কেমন দেখেছি ঃ

আমার আব্বা কেমন মানুষ ছিলেন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ন প্রশ্ন। আব্বা ছিলেন একজন ব্যাতি  মধর্মী মানুষ। অনেকদিক থেকেই তিনি ছিলেন ব্যাতি ম। আব্বার সাথে অনেকেরই এমনকি তাঁর সন্তানদেরও অনেকগুলো বিষয়ে মতপ্রার্থক্য ছিল কিন্তু তার পরও সবাই আব্বাকে প্রচন্ড ভালবাসতেন। আব্বা একদিকে

 

ছিলেন অস¤ব¢

 

কড়া প্রকৃতির। অপরদিকে ছিলেন খবই বন্ধু বৎসল।

 

আব্বার অনেকগুলো নীতি বা আচরণ নিয়ে আমরা তাঁর ছেলেরা তাঁর পেছনে গ্যান গ্যান করলেও তাঁর সামনে গিয়ে কথা বলার মত বদ্ধি, সাহস বা মেধা কারুরই ছিল না। এব্যাপারটা শুধু আমরা ছেলেরা কেন, আমার আম্মা, তাঁর সহকর্মীদের অব¯াও ছিল তথৈবচ। আসল ব্যাপরটা ছিল, আব্বার সম্মোহণী ক্ষমতা ছিল প্রচন্ড। একদিকে তাঁর সন্দর হাসি, অপরদিকে ক্ষুরধার যক্তি এবং সদূরপ্রসারী দষ্টিভঙ্গি যে কোন

লোককেই কনভিন্স করতো এবং মত পরিবর্তন করতে বাধ্য করতো। আব্বার দষ্টিভঙ্গি ছিল অনেক-অনেক

গভীরে। অনেকগুলো বিষয় তিনি এত গভীরে ভাবতেন যে অন্যরা চিšাও করতে পারতো না।   ১৫

 

আব্বা ছিলেন একদিকে নীতিতে অস¤ব¢

 

রকম অটল অপরদিকে খবই উদার প্রকৃতির এবং একটি অসাধারণ

 

ভালবাসার মন, আব্বা খবু স› দর মনের মানষু ছিলেন।

আমাদের পর্ব পরুষদের নিয়ে আব্বার পরিবার ছিল ভারতের বিখ্যাত ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলমু

দেওবন্দের সিলসিলার। আমার জেঠা (বড় চাচা) যিনি নোয়াখালী ইসলামিয়া আলীয়া মাদাসার মোহাদ্দিস ছিলেন তিনি ছাড়াও আমার আব্বার পরিবারে বেশ কয়েকজন আলেম ছিলেন দেওবন্দ থেকে ফারেগ (উত্তীর্ণ)। এই সম্পূর্ণ দেওবন্দী ঐতিহ্যের মধ্যেও আমার আব্বা সকল ইসলামিক গ্র“প এবং দলের সাথে এমনকি অন্য ধর্মাবলম্বী বিশেষত হিন্দদের সাথেও একান্ত হ্রদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতেন।

 

আমাদের গ্রামের প্রয়াত ভপেন্দ্র বাবরু

 

সাথেও আব্বার সর্ম্পক ছিল খবই হ্রদ্যতাপর্ণ এবং সম্মানজনক।

 

 

 

আব্বার জ্ঞান এবং বদ্ধিমত্তা ছিল খবই প্রখর। যে কোন ব্যাপারে সবাই যখন বাহ্যিক বিষয়ে আলোচনা

 

পর্যালোচনায় ব্যাস্ত আব্বা তখন বিষয়গুলো গভীরভাবে তলিয়ে দেখতেন বা ভিন্ন এংগেলে চিšা—

 

করতেন।

 

আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের বাড়ীতে আব্বার কাছে প্রচুর মানষু

 

আসতো প্রতিদিন বিভিন্নজনের

 

বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে। মেহমানদারী চলতো প্রতিনিয়ত প্রতিদিন। এতে আমাদের পড়ালেখাসহ জীবনযাত্রায় কিছু ব্যাঘাত ঘটতো তাতে আমরা একটু বিরক্ত হতাম কিন্তু কিছু বলতাম না বা আব্বার সামনে বলতে সাহস

পেতাম না। আব্বা সেসব বঝতেন এবং আমাদেরকে ডেকে বলতেন। ”বাবা দেখ, আমি জানি তোমাদের কষ্ট

 

হয়, এত মানষু

 

আসে। তবে মনে রেখ, এটা তোমাদের ভাগ্য যে, মানষু

 

তোমাদের বাড়ীতে আসে। তোমাদের

 

বাবা মানষের উপকারে আসছে। তাছাড়া তোমরা যদি মানষকে আদর করো তাহলে তোমাদের প্রয়োজনে অন্যরাও তোমাদেরকে আদর করবে।” আব্বার এই শিক্ষাটা আমার জীবনে অক্ষরে অক্ষরে প্রতিফলিত হতে

দেখেছি।

 

আমার জীবনে আমি বিশের¦

 

১০ টি দেশে প্রায় ৭০-৮০ টি শহরে বন্দরে ভ্রমন করেছি। সেই মালয়েশয়ির গ্রাম

 

গ্রামাšর—

 

কিংবা থাইল্যান্ডের মসলিম লোকালয় যখন যেখানেই গিয়েছি অসংখ্য বন্ধু বান্ধব পেয়েছি, আদর যতœ

 

পেয়েছি আর প্রতিবারই মনে হয়েছে এটা আমার বাবার মানব সেবার ফজিলত।

 

আব্বা একদিকে খবু

 

ব্যাক্তিত্ব নিয়ে চলতেন অপরদিকে ছিলেন অস¤ব¢

 

সাদামাটা, কিন্তু কখনোই দা¤িক¢            বা

 

অহংকারি ছিলেন। তাঁর বন্ধুত্ব এবং চলাফেরা ছিল সমাজের নিরীহ এবং সাধারন মানষের সাথে। মত্যরু

 

আগ

 

পর্য্যন্ত তিনি গ্রামের বাড়ীতেই ছিলেন এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে থাকতে পছন্দ করতেন। আমার বড় ভাইয়েরা অনেক অনরোধ অননয় করেও আব্বা বা আম্মাকে শহরে ভাইদের বাড়ীতে এনে রাখতে পারেনি।

 

আব্বার দষ্টিশক্তি এবং শবনমক্তি ছিল খবই প্রখর। বার্ধ্যক্য বয়সে চশমা ব্যাবহার করলেও আব্বার চোখ

 

কোন কিছইু

 

এড়াতো না। মাদাসা ক্যাম্পাসে ঢকে নারিকেল গাছে যদি নারিকেল ১০টার যায়গায় ৯টা হতো

 

সেটাও আব্বার চোখে এড়াতো না। আব্বার শবনশক্তিও ছিল তেমনি প্রখর। আব্বা যদি এমন কোন আসরে

থাকেন যেখানে ৮-১০জন লোক কোন গভীর আলোচনা বা গল্প গুজবে বা হাসি ঠাটায় মত্ত থাকে। এসময় বাইরে দরে যদি সামান্য কোন শব্দ হয়। ঐ সমাবেশের বাকী ৮-৯ জন লোক না শুনলেও আব্বার কান

 

সেটা এড়াতো না। আব্বা প্রায়ই বলতেন, ”দেখার জন্য চোখ দিয়ে তাকাতে হয়। কিন্তু শোনার জন্য কান

 

পাততে হয়না। কানের দরজা সবসময় খোলা।” হ্যাঁ, আব্বা শুনতে পেতেন খবু কানকে ফাঁকি দিতে পারতো না।

 

ভাল। কোন কিছইু

 

আব্বার

 

আব্বার বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ ছিল সকল ¯রের মানষের সাথে। আব্বা গ্রামের রিকশাওয়ালাদের সাথে বসে গল্প করতে দ্ধিধা করতেন না, মাটিতে বসে চাটাই পেতে খেতেন। অপরদিকে ১৯৮২ সালে বাংলাদেশের নামকরা ১০ জন আলেমের সাথে এবং ১৯৮৯ সালে অন্য আরো ২৩ জন বরেণ্য আলেমের সাথে ২বার

 

ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন এবং সেীদি সরকারের নিমšনে আমšিত¿

 

হয়েছিলেন, এছাড়া বাংলাদেশ

 

জমিয়তুল মোদাররেসীনের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট সেে টারী হবার সুবাদে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, এবং

প্রেসিডেন্ট এরশাদ সকলের নিমšনে আলীশানে ফাইভ স্টার হোটেলে বসেও খেতে দ্ধিধা করতেন না।

 

আমার আব্বার সাথে বেশ কিছু বিষয়ে আমাদের মতপার্থক্য ছিল। বিশেষ করে আমার সাথে। আমার  তরুন বয়সে আমি ছিলাম বাংলাদেশে ইসলাম পšীদের প্রধানতম দ’টি ধারার জামায়াত শিবিরের সমর্থক

 

অপরদিকে আব্বা ছিলেন দেওবন্দপšী। আসলে আব্বাকে শুধু দেওবন্দপšী’

 

বললে ভলু

 

হবে। আব্বা নিজে

 

ছিলেন দারুল উলূম দেওবন্দের ফারেগ তাছাড়া আমার পরিবারের পূর্ব সিলসিলায় অনেকে এই দেওবন্দের ফারেগ ছিলেন। দেওবন্দে ফারেগ ছাড়াও আব্বা স্বাধীনতা পূর্বকালের প্রভাবশালী সংগঠন নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। অপরদিকে আমার তারুন্যের বেশীর ভাগ সময়ই কেটেছে  ধর্মীয় আদর্শিকভাবে আব্বা বা দেওবন্দীদের ভিন্ন মতাদর্শী জামায়াত শিবিরের সাথে। একসময় আমি ছিলাম জামায়াত সমর্থিত মাদ্রাসা ছাত্রদের সংগঠন বাংলাদেশ মাদ্রাসা ছাত্র আন্দোলন পরিষদের  কেন্দ্রীয় আহবায়ক। এজন্য আব্বার পক্ষ থেকে কত রকম শাস্তি ভোগ করেছি তার কোন ইয়ত্তা নাই। শুধু আব্বা

 

কেন আব্বার বন্ধুদের মধ্যেও যেমন আব্বার একবার অন্যতম বন্ধু এক কালের ধর্মমšী¿

 

মাওলানা মান্নানের

 

সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন মাদাসা ছাত্র আন্দোলন পরিষদের আহবায়ক হিসেবে আমার আর দইু সহকর্মেিক নিয়ে। সর্বনাশ! মাওলানা মান্নানের মাথায় যেন বাজ পড়লো। তিনি যেন বিশাসই করতে পারছিলেন না, তাঁর বন্ধু তোফায়েল সাহেবের ছেলে তাঁর কাছে আসবে জামায়াত সমর্থিত সংগঠনের প্রতিনিধি হয়ে।

 

এত কিছরু

 

পরও সত্যি বলতে কি, আব্বার কিছু কিছু শিক্ষা, আদর্শ এবং নীতি এতই মহান ছিল যে, এ জন্য

 

তাঁর সšান হিসেবে আমরা সত্যিই গর্বিত।

আব্বা ছিলেন সবময় নিরীহের পক্ষে, দঃসময়ের বন্ধু। শান শওকত, অর্থ বৈভব এসব কোনদিন আব্বাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। বাংলাদেশে একসময় ছিল যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নকলের বিষ বাষ্পে আ  ান্ত। এমনকি মাদাসাগুলোতে নকল মারাতœক রোগ ধারণ করেছিল। সেসময় তিনি ছিলেন নকলের বিরুদ্ধে জেহাদ

ঘোষনাকারী। অনেকটা বলা যায় শুধমাত্র সে সময় মাদাসা শিক্ষিত বা মাদাসা শিক্ষার দরদীদের মধ্যে একমাত্র আব্বাই ছিলেন সেই জিহাদের সিপাহসালার।

মাদাসা গুলোর যে মাদাসাগুলোতে কেন্দীয় পরীক্ষা হতো, এবং যে কেন্দ্রে মাওলানা তোফায়েল সাহেব

 

(আব্বা) ’হল সপার’ ছিলেন সে কেন্দ্রে নকল কারিরা বা সহযোগীতা কারীরা ছিল তট¯।’

 

পরীক্ষায় নকল

 

বন্ধের জন্য তিনি মাদ্রাসা বোর্ডেও লড়াই করেছিলেন। এবং এজন্য বিভিন্ন পর্যায়ে তাঁেক শ দের

কোপানলেও পড়তে হয়েছিল। এমনকি তিনি যে হলে হল সপার ছিলেন না, সে হলেও আমি নিজ চোখে

দেখেছি, আব্বা হল ক্যাম্পাসে আসার আগেই পরো হলে একটা নড়চড় শুরু হয়ে যেত, “মাওলানা

তোফায়েল সাহেব এসেছেন হলে“।

আব্বা ছিলেন সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলার নীতিতে বিশাসী। তিনি কখনোই কাউকে খশী করার জন্য তোষামোদী নীতিতে বিশাসী ছিলেন না। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং এইচ,এম এরশাদের

 

আমলে মাওলানা মান্নান যখন শিক্ষা প্রতিমšী¿

 

এবং ধর্ম মšী¿

 

ছিলেন। তখন অনেকেই জিয়াউর রহমান,

 

এরশাদ এবং মাওলানা মান্নানের জন্য জ্বী হুজুর করতেন। মাওলানা মান্নান ছিলেন  জমিয়তুল

 

মোদাররেসীনের সভাপতি, আর আব্বা ছিলেন যগ্ম মহাসচিব। আব্বাকে সেসময় দেখেছি জ্বী  হুজরু

 

জ্বী

 

হুজরু

 

না করে তাদের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। সে সময়ই আব্বাকে খবু

 

কাছে থেকে চেনার এবং

 

বঝার সযোগ পেয়েছি। আব্বার সেই সাহসী গুণের জন্য তাঁর সšান হিসেবে আমি গর্বিত। আল-াহ পাক আব্বাকে সেই সাহসী এবং সত্যবাদিতার জন্য পর¯ৃত করুন।

অপরদিকে, ক্ষমতার পালাবদলে জিয়া চলে গেলেন, এরশাদও চলে গেলেন মাওলানা মান্নানের ও মšীত্ব

গেল। মাওলানা মান্নানের সেই দঃসময়ে আব্বা মাওলানা মান্নানের পাশে গিয়ে দাঁড়ালে একবার মাওলানা মান্নান আব্বাকে বললেন, ”তোফায়েল সাহেব, দঃসময়েই আসল বন্ধুর পরিচয় মেলে।”

 

আব্বার বন্ধু বাৎসল্য এতই মধরু

 

ছিল যে, আমি যখন বাংলাদেশ মাদাসা ছাত্র আন্দোলন পরিষদের কেন্দীয়

 

আহবায়ক তখন আমাকে বাংলাদেশের বিশিষ্ট আলেমদের যাদের অনেকেই আব্বার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন যেমন

 

মাওলানা ওবায়দলু

 

হক, মাওলানা মহীউদ্দিন খান এবং ইসলামী বিশবিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর

 

প্রফেসর ডঃ মো¯াফিজরু

 

রহমান এদের সবার সাথে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে হয়েছিল। আমি তাদেঁর সাথে

 

দেখা করতে গিয়েছিলাম মাদাসা ছাত্র আন্দোলন পরিষদের আহবায়ক হিসেবে মাদাসা শিক্ষার সমস্যা নিয়ে। আব্বার পরিচয়ের জন্য নয়। কথার শেষ পর্যায়ে আলাপ প্রসঙ্গে আব্বার পরিচয় দিলে প্রায় সকলেই অনেকটা লাফ দিয়ে বলে উঠতেন, ”বেটা তুই মাওলানা তোফায়েলের ছেলে তা আগে বলিসনি কেন!”

একবার যতদূর মনে পড়ে ১৯৮৯ সাল। ঢাকাস্থ কাদেরীয়া তৈয়্যেবিয়া আলীয়া মাদাসার প্রিন্সীপ্যাল

 

মাওলানা আবদলু

 

জলিল সাহেব তখন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক। ইসলামি ফাউন্ডেশন তার

 

কিছদিন আগেই ৭খন্ড ইসলামি বিশকোষ প্রকাশ করে। এই ৭খন্ড ইসলামি বিশ্ব কোষ কিনে দেয়ার জন্য

 

আব্বাকে বায়না ধরলাম। আমি জানতাম যে, মহাপরিচালক হাফেজ মাওলানা আবদলু

 

জলিল সাহেব

 

আব্বার বন্ধু তিনি সপারিশ করলে একটা বিশেষ কমিশনে কেনা যাবে। আব্বা আমাকে নিয়ে মাওলানা

 

আবদলু

 

জলিল সাহেবের অফিসে গেলেন।

 

শদ্ধেয় হাফেজ মাওলানা আবদলু

 

জলিল সাহেব সেদিন আব্বাকে যে সম্মান দেখিয়েছিলেন তা আমি জীবনে

 

ভলতে পারবো না। আমার স্পষ্ট মনে আছে, এক পর্যায়ে আব্বা একটু বিনয়ের সাথে জলিল সাহেবকে বললেন, “আমার এই ছেলেটা পড়তে ভালবাসে তাই আপনাকে কষ্ট দিতে এলাম।“ তখন মাওলানা

 

আবদলু

 

জলিল সাহেব আব্বাকে বলেছিলেন, ”আরে বলেন কি আপনি, মাওলানা তোফায়েল সাহেব নিজে

 

আমার অফিসে এসেছেন, এটা তো আমার উপর ওয়াজিব হয়ে গেছে। “

আলেমদের পরষ্পরের প্রতি এহেন শ্রদ্ধাবোধ আমাকে খুবই মোহিত করতো। মানুষকে  বিশেষত আলেমদেরকে সম্মান করার আব্বার এই মহান শিক্ষা আমার জীবনের প্রধান শিক্ষা হয়ে থাকবে।

শুধমাত্র ইসলামী দল এবং ভাবাপন্ন ব্যাক্তিরাই নয়। আব্বার সাথে অনৈসলামী দলগুলোর ব্যাক্তিদের সাথেও ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে নোয়াখালী এলাকায় প্রফেসর হানিফ সহ আওয়ামী লীগ

নেতাদের সাথে সখ্যতা এবং উঠাবসা এতই ঘনিষ্ঠ ছিল যে, সে সময় সোনাইমড়ী এলাকার আব্বার ছাত্রদের যারা জামায়াত শিবিরের সাথে জড়িত ছিল তাঁরা আব্বা সম্পর্কে আমাদেরকে কেীতুক করে বলতেন, ”হুজরু

তো আওয়ামী লীগ করেন।” দেখনা আওয়ামী লীগের লোকদের সাথে তাঁর কেমন বন্ধুত্ব!!

আব্বার সংস্পর্শে থেকে আরেকটি বিষয় লক্ষ্য ছিল যেটা অন্য দেওবন্দী আলেমদের মাঝেও লক্ষ্য করেছি

 

সেটা হলো, দারুল উলমু

 

দেওবন্দের প্রতি তাঁদের শদ্ধা এবং ভালবাসা। তিনি সবসময়ই দেওবন্দ নিয়ে গর্বিত

 

ছিলেন। যেটা দেখেছি অন্য দেওবন্দি আলেমদের মধ্যে ও। ১৯৯১ সালে আমি মাদাসা ছাত্র আন্দোলন পরিষদের আহবায়ক থাকাকালিন সময়ে মাদাসা শিক্ষা উন্নয়ন বিষয়ে আলোচনার জন্য একবার গিয়েছিলাম

 

খতিব ওবায়দলু

 

হক সাহেবের কাছে। এক পর্যায়ে তিনি বললেন, ”বাবা, কিসের মাদাসা শিক্ষার উন্নয়ন

 

করবে। মাদাসার ছেলেরা মাদাসা পাশ করে বিশবিদ্যালয়ে পা রাখলেই আর পরিচয় দিতে চায় না যে, সে মাদাসায় পড়েছে। অথচ দেখ আমরা দেওবন্দ থেকে পড়ে এসেছি ৩০ বছর হলো এখনো দেওবন্দের নাম শুনলে গা কাঁটা দিয়ে উঠে।“

বাংলাদেশের ইসলামী সিলসিলার আরেকটি গ্র“প শর্ষিনার পীর সাহেব কিবলা, মাওলানা মান্নান বা ফুলতলী

 

বা সন্নী গ্র“পের হাফেজ মাওলানা আবদলু

 

জলিল সাহেবের সাথে ছিল আব্বার ছিল অসাধারণ বন্ধুত্ব।

 

শর্ষীনার পীর সাহেব কেবলাকেও আব্বা খবু

 

শদ্ধা করতেন, হুজরু

 

ছাড়া কথা বলতেন না।

 

জামায়াতের কেন্দীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা রফিউদ্দিন সাহেব, মরহুম মাস্টার শফিকুল-াহ সাহেব,

 

এবং বর্তমান নায়েবে আমীর মকবলু

 

আহমদ সাহেবের সাথেও আব্বা শদ্ধাপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।

 

 

 

আমার আব্বা অনেকগুলো মহান শিক্ষার মধ্যে একটা গর্বিত শিক্ষা ছিল তোষামোদি না করা। ক্ষমতা বা শক্তির পজা না করা। এজন্য আব্বাকে শক্তিমানদের রোষানলে পড়তে হয়েছে। আব্বার বিরুদ্ধে  ষড়যন্ত্র হয়েছে, এলাকার তথাকথিত হোমরা চোমরাদেরকে তোষামদি না করার কারনে আব^ার বিরুদ্ধে তরুন ছাত্রদেরকে ক্ষেপিয়ে দিয়ে আন্দোলন করা হয়েছে। আব্বাকে অপমান করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সে সময়ও আব্বা টলেন নি। এমনকি বারবার জীবনের উপর সরাসরি হুমকি এসেছে, আব্বাকে গুলির খবু কাছাকাছি যেতে হয়েছে, তিন বার জেলে যেতে হয়েছে। কিন্তু কোনদিন আমার বাবা ক্ষমতার পজা করেননি।

 

 

 

আমার আব্বার কোন দোষ বা ভলু

 

ছিল না এমন কথা আমি বলছি না। আমার আব্বা একজন মানষু

 

ছিলেন,

 

বা বলা যায় একজন সাধারণ মানষু

 

ছিলেন। আব্বার অনেক ব্যার্থতা ছিল, ভলু

 

ছিল। কিন্তু যে বিষয়টা

 

বারবার আমার কাছে ধরা পড়েছে তা হলো আব্বার নীতি, আদর্শ। আব্বার খবু

 

অনহংকার জীবন। আমার

 

আব্বা একজন অস¤ব¢

 

রকমের মেধাবী ছিলেন কিন্তু সে অনযায়ী তাঁর চলা ফেরা ছিল খবই সাধারণ, খবই

 

অনাড়ম্বর, খবই নিরহংকার।

আম্মার মরহুম আব্বার আরেকটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো, একদিকে তিনি যেমন প্রচন্ড কড়া প্রকৃতির ছিলেন

 

অন্যদিকে ছিলেন খবু

 

উদার প্রকৃতির। আব্বা নিজে দারুল উলমু

 

দেওবন্দে লেখাপড়া করেছেন। আমাদের পর্ব

 

পরুষদের অনেকেই দেওবন্দের ফারেগ ছিলেন, এমনকি আব্বা নিজেও দেওবন্দী সিলসিলার সাথে জড়িত

 

ছিলেন। তদানিšন—

 

পর্ব পাকি¯ান নেজামে ইসলামীর কেন্দীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। মরহুম মাওলানা

 

সিদ্দিক আহমদ, ওবায়দলু

 

হক, মাওলানা মহিউদ্দিন খান সহ দেশবরেন্য দেওবন্দী আলেমদের সাথে

 

উঠাবসা করেছেন। কিন্তু তাঁর সšানদেরকে তিনি এক মখো করেন নি।

 

আমাদের চলাফেরা, আদব কায়দা,আক্কিদা বিশাস এব্যাপারে খবু

 

সতর্ক ছিলে, চেহারা সরত, পোষাক

 

আষাক এসব ব্যাপারে দেওবন্দী দষ্টিভঙ্গি বা¯বায়ন করার চেষ্টা করেছেন। তবে তাঁর সšানদের অর্থাৎ আমাদের কাউকে কওমী সিলসিলায় পড়াশোনায় বাধ্য করেন নি। আমার বড় ভাই হাফেজ মাওলানা খালেদ সাইফুল-াহ সম্পূর্ন নিজ উদ্যোগেই কওমী লাইনে পড়াশোনা করেছেন এবং তিনি তাঁর সšানদেরকেও কওমী সিলাসিলায় পড়াশোনা করিয়েছেন। আব্বা আমাদের ভাইদের সবাইকে সরকারী বা আলীয়া মাদাসায় পড়াশোনা করিয়েছেন এবং স্বাধীনতা দিয়েছেন যে, মাদাসা লাইনে পড়াশোনা করার পর যে যেদিকে ইচ্ছা

যেতে পারো।

হয়েছেও তাই, আমার বড়ভাই সম্পূর্ণভাবে কওমী সিলসিলায় পড়াশোনা করে সরকারী লাইনে কামিল পাশ করেছেন এবং জীবন সেভাবে পরিচালনা করেছেন। নিজে কওমী লাইনে পড়েছেন. তাঁর ৩ ছেলেকে হাফেজে

 

কোরআন বানিয়েছেন। মেঝে ছেলে হিফজলু

শেষ করেছে। অপরদিকে সেজে ভাই মাসদু

 

কোরআন শেষে দারুল উলূম হাটহাজারী থেকে দাওরায়ে হাদীস বা অন্যরাও তাদের নিজস্ব দষ্টিভঙ্গি অনযায়ী জীবন দর্শন বেছে

 

নিয়েছে এবং নিজস্ব দর্শন এবং দষ্টিভঙ্গি অনযায়ী নিজদের জীবনকে এগিয়ে নিচ্ছে।

পক্ষাšরে আমি একসময় সরকারী আলীয়া মাদাসা লাইনের তুখোড় ছাত্র হবার পরও সম্পূর্ণ নিজস্ব একটা পদ্ধতি বেছে নিয়েছি। নিজকে তুখোড় ছাত্র বলার বিষয়টা ব্যাখ্যা করার জন্য আরেকটু স্পষ্ট করে বলতে হয়। আমি কোনদিন কওমী লাইনে পড়াশোনা করিনি। ঢাকা আলীয়া মাদাসায় কামিল এবং বিশবিদ্যালয়ে যাবার আগ পর্য্যন্ত আব্বার মাদাসাতেই সরকারি লাইনেই পড়াশোনা করেছি। তথাপী আমার মরহুম আব্বাজানের

দোয়ার বরকতে বলছি, সরকারী লাইনে হোক আর কওমী লাইনের হোক নাহু সরফ কিংবা অসলে ফিকহা, অসলে তাফসীর কিংবা অসলে হাদীসে, জীবনে কোন ছাত্র কোনদিন আমার সামনে পেরে উঠেনি। বা আমার সামনে বহস করার সাহস করেনি। নাহু, সরফ, ফিকাহ, অসলের অনেক কিতাব একেবারে প্রথম অক্ষর

 

থেকে নিযে শেষ অক্ষর পর্যš্য—

 

মখস্ত করেছি মাদাসার বার্ষিক মাহফিল উপলক্ষ্যে সেসব কিতাব প্রথম থেকে

 

শেষ পর্য্যন্ত মখস্ত শুনিয়ে অনেকগুলো পর¯ার পেয়েছি এবং কোনকোন কিতাবের অংশ এখনো হুবহু মখস্ত

 

আছে। আলহামদলিল-াহ। আমি মনে করি এটা স¤ব¢

 

হয়েছে আমার মরহুম বাবার দোয়া, সংস্পর্ষ এবং ওস্ত

 

াদদের দোয়া এবং সহযোগীতা। নাহু সরফের ও¯াদদের মধ্যে কুমিল-া সালেহপরের মাওলানা আবসাইদ

 

সাহেব এবং একই জেলার বানঘরের মাওলানা খায়রুল বাশার সাহেবের অবদান রয়েছে। আল-াহ পাক তাঁদেরকে উত্তম জাযা দান করুন। তবে এখানে আরেকটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, আসলে পড়ালেখা করার জন্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যাক্তি এবং পরিবারই সবচে’ বেশী ভমিকা রাখে। ফার্সি ভাষায় একটি কথা আছে যে ইলম বা পড়ালেখা করার জন্য তিনটি জিনিষ প্রয়োজন তা হলো (১) কিসায়ে মাদার অর্থাৎ মায়ের রান্না

 

অর্থাৎ নিয়মিত খাওয়া দাওয়া তথা স্বা¯্য’

 

ঠিক রাখা (২) কাসায়ে ফেদার বাবার টাকা বা অর্থনৈতিক সাপোর্ট

 

এবং (৩) কোশেশে পেচার অর্থাৎ ছেলের চেষ্টা। ফারসি ভাষায় আরেকি কবিতাও আছে এভাবে

ইলমে রা হার গেজ নায়াবি তা নাহ বাশি শশ খেসাল অর্থাৎ একজন লোক কখনোই জ্ঞানী হতে পারে না বা জ্ঞান অর্জন করতে পারে না তার মধ্যে ৬টি গুনের সমন্বয় না ঘটলে (১) হেরছে কোতাহ (শেখার প্রচন্ড আগ্রহ) (২) ফাহমে কামেল (পূর্ণ বোধ শক্তি) (৩) জময়ে খাতের কুলে- হাল (সব সময় সবিবেচনার পরিচয়

দেয়া) (৪) খিদমতে ও¯াদে বায়াদ (শিক্ষককে সেবা এবং সম্মান করা) (৫)হাম সবক খানি মোদাম (সহপাঠিদের সাথে সসম্পর্ক (৬)লফজে রা তাহক্কীকে খানি (যে কোন শব্দ এবং বিষয়কে গভীর পর্যক্ষেণ এবং পর্যালোচনা করা) তা শবি মরদে কামাল (তাহলেই হতে পারবে পরিপূর্ণ মানষ)।

 

মাদাসা লাইনের সেই তুখোড় ছাত্রটি সেই লাইন ছেড়ে সম্পূর্ণ যগোপযোগী এই লাইন বেছে নেয়া, আমি মনে করি আমার সেই লাইন দর্শনগত দিক থেকে আমার আব্বার দর্শনের বিপরীতে ছিল না। তবে ¯ান কালের

প্রেক্ষাপটে পদ্ধতিগতভাবে কিছু পার্থক্য রয়েছে। আমার নিজের জীবন সর্ম্পকে, জীবনে কি করলাম কি

পেলাম আমার জীবনের লক্ষ্য এবং দর্শন কি সেটা পরবর্তীতে নিজের জীবন ব্ত্তান্ত লিখে জানানো যাবে।

 

 

 

আমার আব্বার ছিল অস¤ব¢

 

রকম সম্মোহনী শক্তি। আমার কাছে এ বিষয়টাই চমৎকার লাগতো,

 

বাংলাদেশে আলেম সমাজের মধ্যে নামকরা যে আলেমের কাছেই গিয়েছি, আমার আব্বা মাওলানা

তোফায়েল আহমদ নামটা শোনার সাথে সাথেই চমকে উঠেছে, জড়িয়ে ধরেছে, খশী হয়েছে। আমার আব্বার সবচে প্রিয় ছাত্রদের মধ্যে একজন ছিলেন ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ আ.ন.ম. রয়ীছদ্দীন। আমার আব্বা সারা জীবন যাঁকে নিয়ে গর্ব করতেন। যিনি আমাদের বাড়ীতেও অনেকবার গিয়েছেন, থেকেছেন।

 

আমার আব্বার পরিচিত এবং বন্ধুর সংখ্যা এত বেশী দেখতে দেখতে আমার মানষিক অব¯া’

 

এমন পর্যায়ে উঠে

 

গেছে যে, মাওলানা তোফায়েল আহমদ নাম বললে যদি না চিনতো তখন বিরক্ত লাগতো, তার সাথে আর কথা বলতেই ভাল লাগতো না। আমার ভাবখানা এমন হয়ে গিয়েছিল যে, মাওলানা তোফায়েলকে চিন না বাপু তোমার সাথে আর কিসের কথা।

 

আব্বা কোনদিন গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাতেন না। সবচে’ আমার ভাল লাগতো, আব্বা মানষকে সম্মান করতেন। মানষের গুণকে মূল্যায়ন করতেন। সারা পথিবীতে যখন দেখেছি এবং প্রতিনিয়ত দেখে আসছি,

 

মানষু

 

শক্তির পজা করে, ক্ষমতার পজা করে, তেলের পজা করে, টাকা পয়সা, ধন দেীলতের পজা করে

 

সেখানে আমার বাবা মাওলানা তোফায়েল আহমদ এগুলোকে পাত্তা না দিয়ে মানষের মনষ্যত্ব, হৃদয়,

 

ভালবাসার কদর করতেন। সাধারন গুনী মানষকে সম্মান করতেন। আমার বাবার এই গুণ আমার কাছে একজন মহামানবের গুণ। এ দষ্টিতে আমার বাবা ছিলেন একজন মহামানব।

আমার আব্বা যতগুলো চিঠি লিখতেন চিঠিগুলোতে থাকতো, প্রেরণা, জ্ঞনগর্ভ আলোচনা, কম কথায় অনেক অর্থপূর্ন কথা। আমেরিকা থাকা অব¯ায় যে ক’ট চিঠি লিখেছিলেন চিঠিগুলো হারিয়ে ফেলেছি। ১৯৯৭ সালে লিখিত একটি চিঠি তুলে ধরছি তবে এই চিঠির একটি অংশ আমি বিশেষভাবে উলে-খ করছি। আমেরিকা প্রবাসী একজন সšানকে কি পরামর্শ দিচ্ছে।

 

”কেবলমাত্র মধ্যপšী’

নেই।”

 

অব¯ায় চলার জন্য যে কোন একটা অবলম্বন বেছে নাও। মোটা টাকার প্রয়োজন

 

 

 

 

পরের লাইনগুলোতে আব্বা আবার লিখেছেন,

 

 

”এতদস্বত্ত্বেও যদি তোমার আর্থিক বিশেষ অসবিধা থাকে তবে কিভাবে সাহার্য্য করা যায় সে চেষ্টা করবো। ইনশাআল-াহ আমি এখন ও বেঁচে আছি এবং একেবারে সহায় সম্বলহীন নয়। আল-াহ তোমার আব্বাকে

 

কোনদিন পর মখাপেক্ষী বা কো বান্দার কাছে মাথা নত করান নাই। কেবলমাত্র আল-াহ রাব্বলু কাছে ---”।

আব্বা আরো লিখলেন,

 

আলামিনের

 

 

 

 

” তুমি এখনো বঝতে পার নাই যে মা বাবার অšর— দিবে সে দিন বঝতে পারবে। ----

 

সšানের জন্য কিরুপ বেদনা থাকে। আল-াহ যেদিন সšান

 

আমেরিকা যাওয়া তোমার জীবনে একটা অগ্নি পরীক্ষা। এতে তোমাকে উত্তীর্ণ হতে হবেই। ধৈর্য্য হারা হবে না। আমেরিকা যাওয়াও সহজ কথা নয়। ৪/৫ লক্ষ টাকা ব্যায় করেও অনেকে যেতে পারেনাও পারে নাই।

.. আমেরিকা আতœবিনোদনের দেশ। পয়সা উপার্জনের দেশ। দীন ধর্মের দেশ নয়। সতরাং হতাশ হবার কারণ

নেই। সফলতা দঃখ কষ্টের মধ্যেই নিহিত থাকে।”

আমি জানি না পথিবীর মধ্যবিত্ত পরিবারের পথিবীর কোথায় কোন বাবা আছে আমেরিকা প্রবাসী ছেলেকে এভাবে চিঠি লিখতে পারে। আমি প্রায় বিশ বছর প্রবাসে কাটিয়েছি। তন্মধ্যে আব্বার জীবিত থাকা অব¯াতেই ১৫-১৬ বছর। এই পনের ষোল বছরে আমার বাবা কোনদিন আমার কাছে একটি টাকাও চাননি।

কোন কৈফিয়তও করেননি। বরং উৎসাহ দিয়েছেন পড়াশোনার, মাথা নত না করার।

 

উপসংহার ঃ

আজকের এই লেখার উপসংহারে আমাকে বলতে হবে। আমি হয়তোবা আব্বার শিক্ষা এবং আদর্শ তেমন একটা ধরে রাখতে পারিনি। আমার আব্বা ভলের উর্দ্ধে ছিলেন এটাও স্বভাবতই বলা যাবে না। কিন্তু আজ আব্বার মত্যতে আনন্দের সাথে বলবো, আমার আব্বার মত একজন অসাধারণ আলেম, অসাধারণ মানষের ঘরে জন্ম নিয়ে আমরা গর্বিত, আনন্দিত। আব্বার কারণে অনেক সম্মানিত আলেমেরে সংস্পর্শে যাবার সযোগ হয়েছিল। এই ওলামাদের সংস্পর্শে একটা বিশেষ শিক্ষা পেয়েছি তা হলো আলেমদের  একজনের প্রতি অন্যের সম্মানবোধ। আমি পথিবীর আনাচে কানাচে ঘরেছি। আমার এই স্বল্প বয়সে আমি যা দেখেছি, যত¯ানে ভ্রমন করেছি, যত মানব আর মহামানবদের সাথে মেশার সযোগ হয়েছে, স¤বত এ বয়সে এ সযোগ কারো হয়নি। আব্বার সাথে আমার অনেক দ্বিমত ছিল, আমার আব্বার সব কাজ সঠিক ছিল সেটা আমি দাবী করবো না। কিন্তু সত্যি বলতে কি, আমার আব্বার কিছু আদর্শিক শিক্ষাগুলো পথিবীর

 

খবু

 

বিরল মহামানষদের মাঝেই পেয়েছি।

 

 

 

 

 

 

(লেখাটি ২০০৭ সালে আমার আব্বার মত্যরু

 

পর লেখা, এবং লেখক কর্তৃক সম্পাদিত এবং প্রকাশিত বাংলা আমার পত্রিকায় ছাপা

 

হয়েছিল। পরবর্তিতে যদিও একটু আধটু সং¯ার করা হয়েছে।)

 

 

 

 
 
 

Recent Posts

See All
এখানে মিষ্টি বিক্রি হয়।

ঈশপের  সেই বিখ্যাত গল্পটি দিয়েই আজকের সম্পাদকীয়টা শুরু করা যাক।  এক বয়স্ক পিতা বাজারে যাবেন এতে তাঁর কিশোর ছেলে বায়নাধরেছে সেও বাবার সাথে...

 
 
 

Comments


Contact

Never Miss a Lecture

Add your text

  • Linkedin
  • Facebook
  • Twitter
  • Instagram
  • YouTube
  • Amazon
White Structure

Never Miss a Lecture

Add your text

_London trip in Bangla.pdf

bottom of page